স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যাওয়ার উপায় কি তা এই ব্লগ থেকে জানতে পারবেন।
শিল্প প্রযুক্তি ও শিক্ষায় উন্নত একটি দেশ জাপান। জাপানে পড়াশোনা
করতে যাওয়ার জন্য অনেক স্টুডেন্ট আগ্রহী কিন্তু তারা অনেকেই জানে
না কি উপায়ে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়।
আজকের এই ব্লক থেকে আমরা জানবো স্টুডেন্ট ভিসা পেতে আপনাকে কি কি করতে
হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা কিরকম থাকতে হবে। এবং জাপানে স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত পড়তে
পারে, এবং জাপানে থাকা-খাওয়া খরচ কত ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকে আমরা
জানবো। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন
স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যাওয়ার উপায়। কথাটি যতটা সহজ আসলে ততটা সহজ না, এর সাথে
অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে। স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ
আছে। স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রথমে জাপানের স্কলারশিপ পেতে হয়।
অথবা সে দেশে পড়াশোনা করার জন্য যেতে অনুমতি পেতে হয়। এই অনুমতি পাওয়ার
পর দেশটিতে যাওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে
গেলে তবেই স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়।
আপনাকে প্রথমে যা করতে হবে প্রথমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেছে নিতে হবে। এবং
ভাষা জানতে হবে আপনি যদি ভাষা না জানেন তাহলে হবে না । ভাষা জানতে
হবে এবং যে প্রতিষ্ঠানে আপনি ভর্তি হতে চান সেই প্রতিষ্ঠানের
এপ্লিকেশন ও ভর্তি ফরম পূরণ করতে হবে। আর আপনি যদি একটা স্কলারশিপ পেয়ে
যান তাহলে আর কোন সমস্যা নেই।
জাপানে পড়াশোনা বা স্কলারশিপ আবেদন
আপনি জাপানে পড়াশোনা করার আগে। আপনাকে নির্ধারিত করতে হবে আপনি কি ভাষায়
স্কুলে বা কলেজে ভর্তি হতে চান। না কোন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজের
ভর্তি হতে চান নির্ধারিত হয়ে।আপনি যদি ভাষায় স্কুল বা কলেজে ভর্তি হতে চান। Japanes Longuage
School আপনার জন্য অনেক ভালো হতে পারে। বা আপনি যদি চান সরকারি
ইউনিভার্সিটি বা কলেজে ভর্তি হবেন তাহলে এই কলেজটি English-taught
Programs অনেক ভালো হতে পারে । আপনাকে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে এই
কলেজে আপনি যদি ভর্তি হতে চান আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি জানতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
জাপানের সরকারি কলেজের বা ইউনিভার্সিটি সবচেয়ে বড় সুবিধা সেখানে স্কলারশিপ
পাওয়া যায় আর আপনি যদি স্কলারশিপটি পেয়ে যান তাহলে আপনার জন্য অনেক
সুবিধা আছে যেমন আপনার কোন ভর্তি ফি লাগবেনা এবং মাসিক কোন খরচ লাগবে
না। এমনকি আপনার বিমান ভাড়া ফ্রি
আর আপনি যদি জাপানের ভাষা ইস্কুলে বা কলেজে ভর্তি হতে চান। আর সেখানে আপনি
যদি স্কলারশিপ পেয়ে যান। তাহলে শুধুমাত্র আপনাকে সেখানে মাসিক খরচ দেওয়া
হব। ভাষা স্কুলে বা কলেজে ভর্তি হওয়ার এই একটা সুযোগই আছে। এখন আপনার
যেটা ভালো লাগে আপনি সেইখানে ভর্তির জন্য এপ্লাই করতে
পারেন।
জাপানের শিক্ষাগত ব্যবস্থা কি রকম
জাপানের শিক্ষাগত ব্যবস্থা অনেক ভালো। জাপানের প্রাথমিক শিক্ষা.৬ থেকে ১২
বছর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করা হয়। আর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ১৫
থেকে ১৮ বছরের মধ্যে শেষ করা হয়। এইটা প্রাথমিক শিক্ষা।
উচ্চশিক্ষা বিদ্যালয় শেষ করতে ৪ থেকে ৬ বছর লাগে। স্বল্পমেয়াদী
কলেজ শেষ করতে ২ থেকে ৩ বছর লাগে। প্রযুক্তি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ
করতে ৫ বছর লাগে। মাস্টার্স শেষ করতে ২ বছর লাগবে। এবং পিএইচডি
করতে ৩ থেকে ৫ বছর সময় লাগে। এটাই জাপানের শিক্ষাগত ব্যবস্থা।
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয় কয়টি আছে
জাপানের বিদ্যালয় আছে মোট ৮১০ টি মত এবং এগুলো বিদ্যালয়ের মধ্যে
ভাগ আছে। যেমন জাতীয় বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮৬ টি আছে। আরো ৯০ থেকে
৯৫ টি বিদ্যালয় আছে। এবং প্রাইভেট বিদ্যালয় আছে প্রায় ৬০০+
আছে।
এবং জাপানে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সহ প্রায়ই ২২০০০ টি ও বেশি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। বর্তমান জাপানে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক বেশি। আপনারা
বুঝতেই পারছেন জাপানের শিক্ষাগত ব্যবস্থা কতটা ভালো। এইজন্যই সবাই
জাপানে পড়ার আগ্রহী হয়ে উঠছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা কিরকম লাগে জাপানে যেতে
আপনি যদি জাপানের ভাষা স্কুলে ভর্তি হতে চান তাহলে আপনাকে HSC পাশ
করতে হবে কিছু ক্ষেত্রে SSC পাশ করলেও ভর্তি নেওয়া হয়। বেশি
ক্ষেত্রেই HSC পাস হতে হয়। আপনি যদি ডিপ্লোমা বা ভোকেশনাল কলেজে ভর্তি হতে
চান তাও আপনাকে HSC পাশ হতে হবে। ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যদি
ভর্তি হতে চান তাহলেও HSC পাস হতে হবে
আপনি যদি মাস্টার্স করতে চান তাহলে আপনার ব্যাচেলর ডিগ্রীর প্রয়োজন হবে। না হলে
আপনি জাপানে মাস্টার্স করতে পারবেন না। এবং আপনি যদি PHD করতে চান
তাহলে মাস্টার ডিগ্রির প্রয়োজন হবে। আপনি যদি মাস্টার্স ডিগ্রির না করে
থাকেন, তাহলে আগে মাস্টার্স করতে হবে না হলে আপনি জাপানে PHD করতে পারবেন
না।
জাপান যাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে
আপনার জাপান যাওয়ার জন্য যেগুলো ডকুমেন্টের প্রয়োজন। সর্বপ্রথম আপনার
পাসপোর্ট থাকতে হবে। এবং পাসপোর্টে কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়েদের থাকতে
হবে। আরো লাগবে পাসপোর্ট সাইজের ছবি,এবং আপনার জন্ম সনদ আপনার পরিচয়
পত্র (NID) আপনার এগুলো পার্সোনাল ডকুমেন্ট লাগবে।
আরো পড়ুনঃ
আপনার একাডেমিক ডকুমেন্ট যেগুলো লাগবে সর্বপ্রথম SSC-HSC সার্টিফিকেট
লাগবে। আরো লাগবে আপনি যে বিদ্যালয় বা স্কুলে ভর্তি হবেন সেই বিদ্যালয়ের
সুপারিশ পত্র এটা খুব জরুরী এটা ছাড়া আপনাকে এয়ারপোর্ট থেকেই বাসায় ফিরে
আসতে হবে। এটা খুব জরুরী ,আর সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা আপনার আর্থিক ডকুমেন্ট
লাগবে। আপনাকে একটা ব্যাংক সেন্টামেন্ট থাকতে হবে এবং ব্যাংকে কমপক্ষে
১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা থাকতে হবে। তাহলে খুব সহজেই জাপানে চলে যেতে পারবেন।
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি কত
আপনি যদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে চান তাহলে ¥282,000 লাগবে যা
বাংলা টাকায় ২ লাখ টাকা
আপনার এক বছরে মোট খরচ হবে প্রায় ¥817,800 যা বাংলা টাকায়
৫-৬ লাখ টাকা লাগবে আপনার এক বছরের খরচ। আর আপনি যদি স্কলারশিপ পান তাহলে
আপনাকে ৫থেকে ৬ লাখ টাকা আর লাগবে না।
আপনি যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান তাহলে ¥282,000 লাগবে যা
বাংলা টাকায় ২ লাখ টাকা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আপনার এক বছরের খরচ হবে
¥532,800 যা বাংলা টাকায় প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের
তুলনায় একটু কম। আর যদি আপনি কোন স্কলারশিপ পেয়ে যান তাহলে আর টাকা লাগবে না।
আর আপনি যদি মনে করেন যে আপনি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পড়বেন তাহলে আপনার
ভর্তি হতে চান তাহলে ¥200,000-¥300,000 যা বাংলা টাকায় দুই থেকে তিন
লাখ টাকার মত লাগতে পারে। আর আপনার এক বছরে খরচ হবে প্রায়
¥700,000-¥1,200,000 যা বাংলাটা গায় প্রায় ৫থেকে ৮ লাখ টাকার মতো
লাগবে। তাহলে আপনি খুব ভালোভাবে চলতে পারবেন।
জাপানে পড়াশোনার সুবিধা কি
জাপানে পড়াশোনা সবচেয়ে বড় সুবিধা হল। বৈজ্ঞানিক ইঞ্জিনিয়ারিং রোবোটিক
মেডিসিন কম্পিউটার সাইট ক্ষেত্রে অনেক উন্নতমান। এখান থেকে গ্রাজুয়েট
কমপ্লিট করলে আপনার যে কোন প্রাইভেট কোম্পানিতে বা সরকারি চাকরির জন্য
এপ্লাই করতে পারেন। আপনি যদি মনে করেন এগুলো চাকরি করবেন না।
আপনি কলেজে বা স্কুলে শিক্ষক হবেন তাও হতে পারবেন এবং আপনার স্যালারি হাই
লেভেলের হবে।
আপনি যদি একজন জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করে
থাকেন। তাহলে আপনি আরো অনেক উপায়ে টাকা আর করতে পারেন। যেমন আপনি কোন একটা
বিষয়ের উপর কোর্স করাতে পার। যেমন ইংলিশ শিখানোর জন্য বা জাপানি কোন ভাষা
শিখানোর জন্য কোর্স করিয়ে মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করতে পারেন। তাহলে বুঝতেই
পারছেন জাপানে লেখাপড়া করলে কত সুবিধা
স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন থাকে
স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ হয়ে থাকে।.৬ মাস ১ বছর বা ২ বছর হয়ে থাকে।
আপনি আপনার ভিসার মেয়াদ যত বাড়িয়ে নিবেন ততদিন মেয়াদ থাকবে। আপনি যদি মনে
করেন আপনার ৬ মাসের জন্য প্রয়োজন আপনি ৬ মাসের জন্য নিতে পারেন। বা আপনার যদি
মনে হয় যে আমার .১ বছরের জন্য প্রয়োজন আপনি ১ বছরের জন্য ভিসার মেয়াদ
বাড়িয়ে নিতে পারেন। সেটা পুরোটাই আপনার উপর ডিপেন্ড করে।
তবে জাপানে স্টুডেন্ট ভিসাতে তিন ধরনের পার্থক্য আছে। যেমন আপনি যদি
ভাষা স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার ভিসার ম্যাথ থাকবে ৬ মাস
থেকে .২ বছর আর আপনি যদি ব্যাচেলর কলেজের স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন। তাহলে
আপনার ভিসার মেয়াদ থাকবে ১ থেকে ৪ বছর পর্যন্ত। আর আপনি যদি মাস্টার্স বা
পিএইচডি করতে যান তাহলে আপনার ভিসার মেয়াদ থাকবে ১ থেকে ৫
বছরের জন্য। আপনার যেরকম মেয়েদের প্রয়োজন সেই রকম করে নিতে পারবেন।
জাপানে কি কোন চাকরির অফার আছে
আপনি যদি জাপানের কোন ইউনিভার্সিটির বা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট হয়ে
থাকেন। তাহলে আপনি আপনার ক্লাস শেষে পার্টটাইম জব করতে পারবেন। আপনি পড়াশোনার
পাশাপাশি কাউকে টিউশনি করতে পারব। আর যদি আপনার ইংরেজি ভাষা বা জাপানি ভাষার
দক্ষতা থাকে তাহলে আপনার চাকরি পেতে অনেক সহজ হবে
আরো পড়ুনঃ
আর আপনার যদি চান গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করার পর আপনি কোন জব করবেন তার জন্য আপনাকে
অনেক ভালো ইংরেজি বা জাপানি ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে। তাহলে জাবানে আপনি খুব সহজেই
স্যালারি জব করতে পারবেন এবং যেগুলো বড় বড় পাইভেট কোম্পানি আছে। সেগুলো
কোম্পানি তো জব করতে পারে। এমনকি আপনি চাইলে জাপানের সরকারি কোন অফিসে জব করতে
পারেনা।
সর্বশেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি উপরের ব্লকটি থেকে আপনি কিভাবে স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যেতে
পারেন এ টু জেড ধারণা পেয়েছেন। আমি আশা করব আপনি সম্পূর্ণটা বুঝতে
পেরেছেন। যদি এর মধ্যে কোন কিছু আপনাদের বুঝতে সমস্যা হয়। অবশ্যই কমেন্ট বক্সে
আমাদেরকে জানাব। আমরা আপনাদের কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমাদের ব্লকটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্লগটি শেয়ার করবেন
এবং আপনাদের পরিচিত মানুষদের দেখার সুযোগ করে দিবেন। আর যদি লেখার মধ্যে কোন
প্রকার ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাদের জানাবেন আমরা
আপনাদের ের রিপ্লাই দিব ইনশাল্লাহ।
আপনারা সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজের যত্ন নিবেন। আর আমাদের জন্য দোয়া
করবেন। আমরা যেন আপনাদের জন্য ভালো কিছু করতে পারি আল্লাহ হাফেজ।
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও অর্ডিনারি আইটির সিনিয়র সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার।
তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন।
৫ বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি শিক্ষার্থীদের অনলাইনে সফল হতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url